জীবনযাপন

শিশুদের নাম কত অদ্ভুত হতে পারে!

0
hakki pakki tribe

পাহাড় ও অরণ্য ঘেরা গ্রাম- ভদ্রপুর। ভারতের বেঙ্গালুরু শহর থেকে ২০ মিনিটের পথ। তবে মজার বিষয় গ্রামে বাস করেন কংগ্রেস, অমিতাভ বচ্চন, সোনিয়া গান্ধী, ক্যালকাটা, ব্রিটিশ, হাইকোর্ট, কফি, বাস, ট্রেন, ফেসবুক, গুগল সবাই।

শিশুদের অদ্ভুত নামের লিস্ট এখানেই শেষ নয়,এখানকার বাবা-মা সন্তানের নাম রাখেন ইংলিশ, কফি, মিলিটারি, হোটেল, ডলার, মাইশোর পাক, হাইকোর্ট, পিস্তল, ভোটের বুথ, সাইকেল রানি, গভর্নমেন্ট, অনিল কাপুর, শাহরুখ খান, আমির খানেরাসহ আরও অনেক কিছু।

জানা গেছে, এমন নিয়ম নাকি চলে আসছে বহুদিন ধরেই। সেখানে এগুলো খুব স্বাভাবিক হলেও বাইরের মানুষের কাছে অস্বাভাবিক বটেই।

এখানে শিশুদের নাম রাখা হয় বিভিন্ন নামবাচক বিশেষ্য দিয়ে। সেগুলি হতে পারে কোনও বিখ্যাত জায়গা, সরকারি অফিস, যানবাহন কিংবা কোনো খাবার। হতে পারে কোনো সেলিব্রেটি, রাজনৈতিক দল বা বিখ্যাত সোশ্যাল মিডিয়া। সোজা কথায় সন্তান জন্ম নেওয়ার পর যে নাম মনে আসে, সেটাই হয় সন্তানের নাম।

ভদ্রপুর গ্রামের বাসিন্দারা খুবই সাধারণভাবে জীবনযাপন করে। এখানে নেই আভিজাত্যের ছোঁয়া। বাড়িগুলো টালির ছাদ দেওয়া। এখানকার আদিবাসীদের বলা হয় ‘হাক্কি পিক্কি’। কন্নড় ভাষায় ‘হাক্কি পিক্কি’ শব্দের অর্থ ‘পাখি শিকারি’। এই সম্প্রদায়ের ১৪০টি পরিবারের বাস এই ভদ্রপুরে। তারা এবার গুজরাথিওয়া, কালিওয়ালা, মেওয়ারা, পানওয়ারা এই চারটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত।

হাম্পি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ট্রাইবাল স্টাডি’ বিভাগের গবেষণার মাধ্যমে জানা গিয়েছে, ‘হাক্কি পিক্কি’ সম্প্রদায়ের মানুষদের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন রাজপুত। রাণা প্রতাপের সেনাবাহিনীর যোদ্ধা। তাদের পদবী ছিল সিংহ। মোগলদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর এই সম্প্রদায়ের পূর্বপুরুষেরা আশ্রয় নিয়েছিলেন দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন অরণ্যে। যাযাবরের মত ঘুরে বেড়াতেন এখানে সেখানে।

খিদে মেটাতে বাধ্য হয়ে জঙ্গলের পশু ও মাছ স্বীকার করতেন। এটিই হয়ে যায় তাদের পেশায়। তবে এখন তাদের পেশা হস্তশিল্প। হাক্কি পাক্কিদের হস্তশিল্প বেশ জনপ্রিয়। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরও তারা বাস করতেন জঙ্গলে। ১৯৭০ সালে ভারতের বন দফতরের আইনে শিকার নিষিদ্ধ করা হয়। জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে আস তে বাধ্য হয় তারা।

ভারত সরকার তাদের বসবাসের জন্য জঙ্গলের পাশেই জমি দেয়। সেখানেই গড়ে ওঠে এই সম্প্রদায়ের এক নতুন ভুবন। এখন তারা প্লাস্টিক ও কাপড় দিয়ে মালা ও বাড়ি সাজানোর শৌখিন সরঞ্জাম তৈরি করেই জীবিকা চালান।

মূলত জঙ্গল ছেড়ে বাইরে আসার পর থেকেই সন্তানদের অদ্ভুত নাম রাখতে শুরু করে তারা। এর উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের আসল পরিচয় গোপন রাখা। ভদ্রপুরের গ্রাম প্রধানের নাম ‘হাইকোর্ট’। তার জন্ম হয়েছিল ভারতের হাইকোর্টের পাশে এক তাঁবুতে।

আরও পড়ুন : কিভাবে পেনড্রাইভ লক করবেন

৬০ সেকেন্ডে প্রায় ৫টি মুরগির পা খাওয়ার রেকর্ড

Previous article

বয়স শুধুই সংখ্যা প্রমাণ করলেন ৮৫ বছরের এই উদ্যোক্তা

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *